
আমার নাম মাহমুদা বেগম, এবং আমি একজন স্তন ক্যান্সার রোগী। আমার ক্যান্সারের যাত্রা শুরু হয়েছিল যখন আমি আমার স্তনে একটি গুটি অনুভব করি, যা আমি প্রথমে গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গুটিটি বড় হতে থাকে, এবং আমার উদ্বেগও বাড়তে থাকে। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে আমি জানলাম যে, এটি স্তন ক্যান্সার। এই সংবাদ আমাকে আঘাতের মতো ভেঙে দেয়, আমি হতাশ, ভয় ও অনিশ্চয়তায় ডুবে যাই।
একটি সাধারণ পরিবার থেকে আসার কারণে, আমি শুধুমাত্র মানসিক চাপ নয়, চিকিৎসার জন্য আর্থিক চাপও অনুভব করছিলাম। কেমোথেরাপি, অস্ত্রোপচার এবং অন্যান্য চিকিৎসা ব্যয়ের কথা চিন্তা করলেই শ্বাসরোধ হয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময়েই ফাইটিং ক্যান্সার বাংলাদেশ (এফসিবি) আমার জীবনে এলো।
এফসিবি আমার জন্য এক দুর্দান্ত সমর্থন সিস্টেম হয়ে উঠলো। তারা আমাকে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছিল, আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল এবং উপযুক্ত চিকিৎসকদের সাথে সংযুক্ত করেছিল। তাদের মানসিক সমর্থন আমাকে প্রতিদিন সাহস নিয়ে বাঁচার শক্তি দিয়েছে, যখন আমি অনুভব করতাম যে কিছুই আর সম্ভব নয়।
এফসিবির মাধ্যমে আমি অন্য রোগীদের সাথে পরিচিত হলাম যারা একই সংগ্রামের মধ্যে ছিলেন, এবং সেখানে আমরা একে অপরের সঙ্গে আমাদের যন্ত্রণা, ভয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আশা শেয়ার করতে পারতাম। আমি একা নই এই যুদ্ধে। তাদের সাহায্যে আমি চিকিৎসা নিতে সক্ষম হয়েছিলাম এবং ধীরে ধীরে ফলাফল দেখতে শুরু করি।
আজ, যদিও আমার যাত্রা সম্পূর্ণ হয়নি, আমি নতুন আশা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছি। আমি এখনও লড়াই করছি, কিন্তু জানি যে এফসিবি-এর মতো সংগঠনগুলোর সহায়তায় আমি একা নই। আমি সকল মহিলাকে অনুরোধ করছি, নিয়মিত চেকআপ করানোর জন্য এবং কোনো ছোট লক্ষণও উপেক্ষা না করতে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ আমার জীবন বাঁচিয়েছে, এবং আমি এই বার্তা অন্যদেরও পৌঁছাতে চাই।
স্তন ক্যান্সার মৃত্যুদণ্ড নয়; এটি একটি যুদ্ধ, এবং সঠিক সমর্থন পেলে আমরা এটি জয়ী হতে পারি। এফসিবি-কে আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ, কারণ তারা আমাকে লড়াই করার শক্তি দিয়েছে, যখন আমাকে আর্থিক ও মানসিক সমর্থন প্রয়োজন ছিল, এবং তারা আমাকে দেখিয়েছে যে, যাত্রা যত কঠিনই হোক, আশার আলো সর্বদা রয়েছে।
শক্ত থাকুন, আশা রাখুন, এবং কখনো হার মানবেন না। একসাথে, আমরা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি!